বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:১৮ পূর্বাহ্ন
ই-কণ্ঠ রিপোর্ট:: জিপিআরএস লোকেশনসহ সারাদেশের পেট্রোল পাম্পগুলোর তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছিল জ্বালানি বিভাগ। তেল বিপণন কোম্পানি এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) গতবছরের ২৭ অক্টোবর এই আদেশ দেওয়া হয়। চার মাস পেরিয়ে গেলেও এই সিদ্ধান্তে কর্ণপাত করেননি কেউ। গত নভেম্বরে দেশে কোন জ্বালানিতে কতটি যানবাহন চলে সেটারও একটি তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছিল জ্বালানি বিভাগ। সেটাও প্রতিপালন করেননি সংশ্লিষ্টরা। অর্থাৎ প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারকদের কথা আমলে নিচ্ছেন না জ্বালানি সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, নতুন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সাবেক জ্বালানি সচিব আনিসুর রহমানের সময় জ্বালানি বিভাগের সমন্বয় সভায় এই দুই সিদ্ধান্ত হয়। পরের বৈঠকগুলোতে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কথা একইভাবে লেখা রয়েছে।
জ্বালানি বিভাগ বলছে, দেশে এখন জ্বালানি সংমিশ্রণের কথা চিন্তা করা হচ্ছে। মানুষ যাতে সস্তায় বিকল্প জ্বালানি সংগ্রহ করতে পারে সে জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতির কারণে সরকার মনে করছে পরিবহনে এলপিজি ব্যবহার সাশ্রয়ী হবে। এজন্য সারাদেশে এলপিজি বিপণন কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে কোথায় কোথায় এনার্জি স্টেশন রয়েছে তা জানাটা জরুরি। আবার একই জায়গায় বিকল্প জ্বালানির সংস্থান করা হলে মানুষও উপকৃত হতো। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিতে সেই পরিকল্পনায় ভাটা পড়েছে।
জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সঠিক পরিকল্পনার জন্য মাঠ পর্যায়ের তথ্য পাওয়াটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমাদের কাছে পরিপূর্ণ তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। যে কারণে এবার সংশ্লিষ্টদের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। হাইড্রোকার্ন ইউনিটকে বলা হয়েছে দুই সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে কোন জ্বালানিতে কতটি পরিবহন চলছে। পেট্রোল পাম্পগুলোর জিপিআরএস লোকেশন দুই মাসে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জ্বালানি বিভাগ বলছে, যেভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে চলেছে তাতে পরিবহনের জন্য বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক গাড়িকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। এখন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার পালা। একটি সাধারণ গাড়িতে (হাইব্রিডে) প্রতি ১২ কিলোমিটারের জন্য এক লিটার অকটেন প্রয়োজন হয়। প্রতি কিলোমিটারে জ্বালানি আট টাকার কাছাকাছি। কিন্তু ইলেকট্রিক গাড়ির পরিবহন ব্যয় হবে ৫০ পয়সা। ইতোমধ্যে উন্নত দেশগুলো তাদের পরিবহনে বিদ্যুতের ব্যবহার শুরু করেছে।
বিপিসি সূত্র বলছে, তারা পেট্রোল পাম্পের জিপিআরএস লোকেশন করার জন্য জরিপ অধিদফতরের সঙ্গে কাজ করতে চায়। এজন্য আলোচনা চলছে।
সারাদেশের পেট্রোল পাম্পের একটি তালিকা রয়েছে। তবে জিপিআরএস লোকেশন করা নেই। এটি করা সম্ভব হলে অবৈধ এবং ভেজাল তেল বিক্রি প্রতিরোধ সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে অন্যান্য কাজ থাকায় বাড়তি এ কাজ করতে কিছুটা সময় লাগছে বলে মনে করেন বিপিসির এক কর্মকর্তা।